• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

তেঁতুলিয়ায় সপ্তাহজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা     

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২১  

উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এতে জেঁকে বসেছে শীত। সপ্তাহজুড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। বিকেলের পর থেকে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে দুর্ভোগে ছিন্নমূল ও দুঃস্থ মানুষরা। সামনের সপ্তাহে শীত আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।

গতকাল রোববার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে সীমান্ত উপজেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগেরদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (দিনের তাপমাত্রা) বর্তমানে ১৫ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। দিনে কিছুটা গরম আবহাওয়া থাকলেও সন্ধ্যা হতেই শুরু হয় শীতের তীব্রতা। রাতভর পড়ে কুয়াশা। এতে দুঃস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সকালে বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
উপজেলা সদরের হাফিজাবাদ এলাকার মারুপাড়া গ্রামের আল আমিন বলেন, কয়েক দিন ধরেই শীত অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের প্রতিদিন সকাল সকাল ক্ষেতে কাজ করতে যেতে হয়। শীতের কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে দিনে রোদ থাকায় দুর্ভোগ কিছুটা কম। তবে শীত আরও বাড়লে আমার কীভাবে কি করবো জানি না।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সূত্র জানায়, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ এর মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ এর মধ্যে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে থাকলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে বর্তমানে পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, বর্তমানে প্রায় প্রতিদিন সারা দেশের মধ্যে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। রোববার তেঁতুলিয়ায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। শনিবারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এতে শীতের তীব্রতাও বাড়বে

দিনে গরম আর সন্ধ্যার পর ঠাণ্ডার কারণে বেড়েছে শীতজনিত রোগ-বালাইও। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন অসংখ্য শীতজনিত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, শীতের কারণে প্রতি বছর সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বর্তমানে বেশি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী আধুনিক সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও বেড়ে গেছে।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় একটি শীতপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানকার মানুষ কিছুটা শীত সহিষ্ণু। তবে কয়েকদিন ধরে এখানে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। শীত নিয়ে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম প্রস্তুতিও আছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ উপজেলায় ২১ হাজার ৬০০ পিস শীতের কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া আরও ৮ লাখ টাকা দিয়ে দুই হাজার কম্বল কিনে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শীতের প্রকোপ থেকে ছিন্নমূল মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসা হচ্ছে। তারাও বিভিন্ন এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –